'ফেলে আসা স্মৃতি': একটি গাছের করুণ কাহিনী। Small Story on Trees with Moral

0

ফেলে আসা স্মৃতি: এক আম গাছ, এক জীবনের গল্প 

'ফেলে আসা স্মৃতি': একটি গাছের করুণ কাহিনী। Small Story on Trees with Moral

প্রিয় বন্ধুগণ, আজ তোমাদের জন্য Info Edu Story নিয়ে এসেছে আমগাছের স্মৃতি কথার দুঃক্ষের কাহিনী । গল্পের নাম 'ফেলে আসা স্মৃতি' (Fele Asa Smriti)।গল্পের রচয়িতা সেখ সামিম। 

Heart Touching Story in Bengali 

আমাদের এই ওয়েবসাইট তোমরা পাবে গাছের গল্প ,গাছ নিয়ে ছোটদের গল্প ,গাছ: একটি জীবনের গল্প ,পরিবেশের গল্প,ভালোবাসার গল্প, প্রেমের দুঃক্ষের কাহিনী, ভালোবাসার করুন কাহিনী, কষ্টের গল্প, সুন্দর সুন্দর ভুতের গল্প ,ব্যর্থ প্রেমের কষ্টের গল্প, ভুতের গল্প বাচ্চাদের ,ভুতের গল্প সমগ্র ,দুঃখের কাহিনী ,প্রেমের কাহিনী,মজার গল্প,Bengali দুঃখের কাহিনী ,বাংলা দুঃখের গল্প । 

Sad Love Story Bangla। Mango Tree Sad Story 

আমাদের ওয়েবসাইট এ সংকলিত রয়েছে ভুতের গল্প , প্রেমের গল্প , অভিযানের গল্প , বিজ্ঞানবিষয়ক গল্প ,রহস্যময় গল্প ,অসমাপ্ত কষ্টের প্রেমের গল্প, হাসির গল্প , মজার গল্প , ব্যর্থ প্রেমের গল্প কাহিনী , উপন্যাস এবং ছোট গল্প। 

"ফেলে আসা স্মৃতি"

একটি ছোট গ্রামে ছিল একটি বহু পুরানো আম গাছ। গাছটি ছিল অনেক বছর আগে রোপণ করা যখন গ্রামের বয়স্ক মানুষরা তরুণ ছিল। গাছটির শিকড় মাটি ছুঁয়ে গভীরে প্রবাহিত হয়েছিল, এবং তার শাখাগুলি আকাশে বিস্তৃত হয়ে সবুজ ছায়া দিয়েছিল। গাছটির জীবনের শুরু হয়েছিল একজন ছোট ছেলের হাত থেকে, যে সবে বড় হতে শুরু করেছিল। তার নাম ছিল রমেশ দাস।

রমেশ  ছিল গ্রামের সকলের নয়নের মণি তাই সকলে ওকে আদর করে রামু বলে ডাকতো। ওই আম গাছটা ছিল রামুর প্রাণ । সে প্রতিদিন গাছটির নিচে বসে পড়ালেখা করত, গাছটির নিচে খেলত, এবং প্রতিদিন পুকুর থেকে জল তুলে গাছটিকে স্নান করাত। গাছটির সঙ্গেই ছিল তার শৈশবের বহু স্মৃতি, কখনও মায়ের কোলে, কখনও বন্ধুদের সাথে হাসি-খুশি, কখনও বা একা বসে আকাশের দিকে তাকিয়ে স্বপ্ন দেখা। গাছটি দেখেছিল রামুর সেই সমস্ত দিনগুলো, যেমন একটি বন্ধুর সঙ্গী, প্রতিটি মুহূর্তের সাক্ষী।

এই ভাবেই হেসেখেলে দিনগুলো কাটছিল এবং রামু বড় হচ্ছিল। একদিন গাছটির নিচে এসে সে হঠাৎ করে স্থির হয়ে দাঁড়াল। গাছটির দিকে তাকিয়ে বলল, “তুমি জানো, 'গাছ বন্ধু ' আমি তোমার নিচে বসে বড় হয়েছি, কিন্তু এখন আমাকে অন্য শহরে কাজের জন্য চলে যেতে হবে। হয়তো আর তেমন সময় পাব না তোমার কাছে আসার।” গাছটি যেন গম্ভীরভাবে তার দিকে তাকিয়ে ছিল, বুঝতে পারছিল যে সে আর কখনো পুরনো দিনের মতো ফিরে আসবে না, আর কখনো তার সাথে খেলা হবে না।

রামু শহরে যাবার সময় এগিয়ে আসছিল যত ততই গাছটা জিমিয়ে পড়ছিল, এই ভাবে একদিন রামু শহরে চলে গেলো এবং তারপর থেকে আম গাছটা বিষন্নতায় জিমিয়েই থাকতো। কিন্তু সময়ের সাথে সাথে গাছটি নতুন এক মুখ দেখতে পেল। রামুর সন্তান, ছোট সুনীল। সুনীল ছিল একেবারে বাবার মতো, আম গাছটির নিচে খেলত, গাছটির শাখায় ঝুলে থাকত। তাকে দেখে গাছটি কিছুটা আশা অনুভব করেছিল। মনে হচ্ছিল, হয়তো শীঘ্রই পুরনো সোনালী দিনের মতোই সেই আনন্দ ফিরে আসবে।

কিন্তু, সময় বড়ো নিষ্ঠুর , সে যে কারোর জন্যে থেমে থাকে না, তাই অতীতের ঘটনায় যেনো পুনরাবৃত্তি হচ্ছিল। সুনীলও বড় হচ্ছিল, কিন্তু দুনিয়ার ঝক্কি-ঝামেলা, পড়াশোনা এবং তার নিজের জীবনের চিন্তায় সে গাছটির কথা যেনো ধীরে ধীরে ভুলে যাচ্ছিল। গাছটি অপেক্ষা করছিল, কিন্তু সুনীল তার অগণিত দিনগুলো বড্ড ব্যস্ততার মধ্যে কাটিয়ে দিচ্ছিল। একদিন গাছটি তার পাতা ঝরিয়ে ফেলেছিল, যেন সে ভাবছিল, "আমি এখনো তাকে দেখছি, তবে কি সে আমাকে আবার মনে রাখবে?" গাছটির শিকড় গভীরে পৌঁছালেও তার আত্মা একটু একটু করে শুকিয়ে যাচ্ছিল।

কয়েক বছর পর, সুনীলও তার জীবনের পথ অনুসরণ করে চলে গেল শহরের দিকে, ঠিক যেমন তার বাবা রমেশ ওরফে রামু একদিন চলে গিয়েছিল। একদিন সেই আম গাছটি আর দাঁড়িয়ে ছিল না। এক বিকেলে, যখন সূর্য ডুবছিল, গাছটি ভেঙে পড়ে যায়। তার বড় বড় শাখাগুলি মাটিতে পড়ে, মাটির সাথে মিশে যেতে থাকে। গাছটি যেন জানত, তার সময় শেষ হয়ে এসেছে। সে চলে গেল, কিন্তু তার বাকি ছিল শুধু একটুকরো ছায়া।

গাছটির মতো, এই গ্রামটি, রামু, সুনীল - সবাই একদিন চলে যাবে। তবে, জীবনে যা সত্যি থাকে, তা হলো আমাদের স্মৃতি, আমাদের সম্পর্ক, এবং আমাদের শিক্ষা। গাছটি চলে গেল, কিন্তু সে আমাদের শেখাল - সময় যাই হোক, জীবন আসলে প্রজন্ম থেকে প্রজন্মে চলে। তবে আমাদের উচিত, আমাদের প্রিয় স্মৃতিগুলোর প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে, আমাদের জীবনের ছোট ছোট মুহূর্তগুলোকে মূল্য দেওয়া। কারণ, আজ যা আছে, তা কাল আর থাকবে না।

এটাই গাছটির আমাদের জন্য শেষ বার্তা: "জীবন বহমান নদীর মত চলে যায় । এবং তার সাথে সাথে আমাদের প্রিয় মানুষ গুলো প্রকৃতির নিয়মে আমাদের ছেড়ে চলে যায় কিন্তু, আমাদের হৃদয়ে প্রিয় মানুষদের স্মৃতি চিরকাল রয়ে যায়।"


'ফেলে আসা স্মৃতি': গল্পের প্রশ্ন উত্তর । Emotional & Heart Touching Bangla Story

প্রশ্ন ১: গল্পে উল্লেখিত গ্রামটি কোথায় অবস্থিত ছিল?

ক. একটি বড় শহরে

খ. একটি ছোট গ্রামে

গ. একটি উপকূলীয় এলাকায়

ঘ. একটি পাহাড়ি অঞ্চলে

উত্তর: খ. একটি ছোট গ্রামে


প্রশ্ন ২: আম গাছটি প্রথম কে রোপণ করেছিল?

ক. রামুর বাবা

খ. রামুর বন্ধু

গ. একজন ছোট ছেলে

ঘ. গ্রামের বয়স্ক মানুষ

উত্তর: গ. একজন ছোট ছেলে


প্রশ্ন ৩: রামু গাছটির সাথে প্রতিদিন কী করত?

ক. গাছটির ফল পাড়ত

খ. গাছটির নিচে পড়াশোনা করত

গ. গাছের শিকড় কেটে ফেলত

ঘ. গাছটির ছায়ায় ঘুমাত

উত্তর: খ. গাছটির নিচে পড়াশোনা করত


প্রশ্ন ৪: রামু শহরে যাওয়ার পর আম গাছটির অবস্থা কেমন ছিল?

ক. আরো সবুজ হয়ে উঠেছিল

খ. ফলবতী হয়েছিল

গ. বিষন্নতায় জিমিয়ে ছিল

ঘ. অন্য কেউ গাছটির যত্ন নিয়েছিল

উত্তর: গ. বিষন্নতায় জিমিয়ে ছিল


প্রশ্ন ৫: সুনীল কে ছিলেন?

ক. রামুর ছেলে

খ. রামুর ভাই

গ. রামুর বন্ধু

ঘ. রামুর প্রতিবেশী

উত্তর: ক. রামুর ছেলে


প্রশ্ন ৬: আম গাছটি সুনীলের সঙ্গে কীভাবে নতুন করে আশা অনুভব করেছিল?

ক. সুনীল গাছটি নতুন করে রোপণ করেছিল

খ. সুনীল গাছটির নিচে খেলত

গ. সুনীল গাছটির ফল সংগ্রহ করত

ঘ. সুনীল গাছটি কেটে ফেলেছিল

উত্তর: খ. সুনীল গাছটির নিচে খেলত


প্রশ্ন ৭: গাছটি কেন তার পাতা ঝরিয়ে ফেলেছিল?

ক. বৃষ্টির অভাবে

খ. গরমের কারণে

গ. সময়ের নিষ্ঠুরতা অনুভব করায়

ঘ. কেউ গাছটি কেটে ফেলেছিল

উত্তর: গ. সময়ের নিষ্ঠুরতা অনুভব করায়


প্রশ্ন ৮: গাছটি কখন মাটিতে পড়ে যায়?

ক. সকালে

খ. বিকেলে

গ. মধ্যরাতে

ঘ. ভোরবেলা

উত্তর: খ. বিকেলে


প্রশ্ন ৯: গল্পের মূল বার্তাটি কী?

ক. গাছের যত্ন নেওয়া উচিত

খ. মানুষ প্রকৃতির অংশ

গ. স্মৃতিগুলোই জীবনের সত্যিকারের ধন

ঘ. গ্রাম ছেড়ে শহরে যাওয়া উচিত

উত্তর: গ. স্মৃতিগুলোই জীবনের সত্যিকারের ধন


প্রশ্ন ১০: গাছটি আমাদের কী শিখিয়েছে?

ক. গাছের ফল খাওয়া উচিত

খ. জীবনের মূল্যবান মুহূর্তগুলো সংরক্ষণ করা উচিত

গ. শহরে কাজ করা উচিত

ঘ. সময় থেমে থাকে না

উত্তর: খ. জীবনের মূল্যবান মুহূর্তগুলো সংরক্ষণ করা উচিত


Short Motivational Story in Bangla। বাংলা গল্প | Bangla Golpo

প্রশ্ন ১: আম গাছটি কে এবং কবে রোপণ করেছিল?

উত্তর: আম গাছটি একজন ছোট ছেলে রোপণ করেছিল যখন গ্রামের বয়স্ক মানুষরা তরুণ ছিল।

প্রশ্ন ২: রামুর শৈশবের কোন কোন স্মৃতি গাছটির সাথে জড়িত ছিল?

উত্তর: রামু গাছটির নিচে পড়ালেখা করত, খেলত, এবং প্রতিদিন পুকুর থেকে জল এনে গাছটিকে স্নান করাত।

প্রশ্ন ৩: রামু শহরে যাওয়ার সময় গাছটির প্রতি কী বার্তা দিয়েছিল?

উত্তর: রামু বলেছিল, “তুমি জানো, 'গাছ বন্ধু,' আমি তোমার নিচে বসে বড় হয়েছি, কিন্তু এখন আমাকে অন্য শহরে কাজের জন্য চলে যেতে হবে।”

প্রশ্ন ৪: সুনীলের আচরণে আম গাছটি কীভাবে আশার সঞ্চার করেছিল?

উত্তর: সুনীল গাছটির নিচে খেলত এবং তার শাখায় ঝুলে থাকত, যা দেখে গাছটি পুরনো দিনের আনন্দের স্মৃতি অনুভব করেছিল।

প্রশ্ন ৫: গল্পটি থেকে আমরা কী শিক্ষা পাই?

উত্তর: গল্পটি আমাদের শেখায় যে জীবনের মূল্যবান মুহূর্তগুলোকে সংরক্ষণ করতে হবে এবং স্মৃতিগুলোকে শ্রদ্ধা জানাতে হবে।

Tags

Post a Comment

0Comments
Post a Comment (0)
তারানাথ তান্রিক সমগ্র
তারানাথ তান্রিক সমগ্র - বিভূতিভূষণ বন্দোপাধ্যায় ও তারাদাস বন্দোপাধ্যায়